পপি এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন কি? আমাদের মধ্যেই অনেকেই রয়েছেন যাদের লোন প্রয়োজন হয় আর আমাদের আশেপাশে লোন প্রদান করার জন্য আমরা একটি লোন প্রদানকারী  সংস্থা দেখতে পাই সেটি আর অন্য কোন সংস্থা নয় বরং এরি পপি এনজিও। সাধারণত সরকারি-বেসরকারী ব্যাংক থেকে ঋঙ নেওয়ার ব্যবস্থা অনকটা কঠিন হলেও পপি এনজিও লোন পদ্ধতি বেশ সহজ। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে “পপি এনজিও লোন পদ্ধতি “ জানানোর পাশাপাশি বিস্তারিত তথ্য জানাবো। তবে প্রথমেই আপনাকে পপি এনজিও লোন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। 

পপি এনজিও লোন কী?  

পপি এনজিও লোন হলো এমন একটিমলোন যা সাধারণত গ্রামের দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষদেরকে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার একটি লোন। এই লোনটি সাধারণত জামানতবিহীন একটি ঋণ। তবে পপি এনজিও লোন পাবার জন্য অবশ্যই  গ্রাহককে বপশ কিছু শর্তাবলী অনুসরণ করতে হয় ও সহজ কিস্তির মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এবার তবে পপি এনজিও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

পপি এনজিও লোন পদ্ধতি

প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোন পদ্ধতির বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে যা অনুসরণ করে গ্রাহককে লোনের আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে পপি এনজিও লোন পদ্ধতি এর ব্যতিক্রয় নয়। নিম্নে ধাপ আকারে পপি এনজিও লোন পদ্ধতি সমূহ উপস্থাপন করা হয়েছে: 

  • প্রাথমিক ভাবে পপি এনজিও এর মাঠকর্মীর সাথে যোগাযোগ করুন ও তার সাথে আপনার চাহিদা ও লোন সম্পর্কিত তথ্য জানিয়ে আপনার নিকটস্থ পপি এনজিও এর শাখা অফিসে যোগাযোগ করুন।।
  • শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করুন। 
  • আবেদনপএ সংগ্রহ করুন ও প্রাথমিক ভাবে লোন নেওয়ার জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করুন। 
  • প্রযোজনীয় নথিপত্র জমা দিন। 

সাধারণত আবেদন পএ ও সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদান করার পর শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা আপনার লোনটি পর্যালোচনা করবেন ও নূন্যতম ৭ দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আপনার লোনটি অনুমোদন করবেন ও আবেদনকৃত লোনের অর্থ আপনাকে বুজিয়ে দিবেন। তবে পপি এনজিও লোন নেওয়ার আগে অবশ্যই বিবেচনা করুন আপনি লোন পাওয়ার উপযুক্ত কিনা।

পপি এনজিও লোন পাওয়ার যোগ্যতা 

পপি এনজিও লোন গ্রহণের জন্য অবশ্যই আবেদনকারীর বেশ কিছু যোগ্যতা থাকা আবশ্যক। পপি এনজিওর ঋণ কার্যক্রমে আবেদন করতে হলে নিন্মলিখিত শর্তাবলী অনুসরণ করতে হয়: 

  • আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে ও সর্বোচ্চ ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে । 
  • অবশ্যই কৃষক, ক্ষুদ্র উদ্যোগতা, দিনমজুর,গৃহিণী ও স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবেন। 
  • অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে নিদিষ্ট এলাকার। 
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করতে হবে। যেমন:
    • জাতীয় পরিচয় পএের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। 
    • দুই কপি পার্সপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে। 
    • ঠিকানার প্রমাণপএ প্রয়োজন হবে। 
    • আয়ের সঠিক উৎস থাকতে হবে ও আয়ের উৎসের প্রমাণপএ প্রদান করতে হবে। 
    • নমিনি ও গ্যারেন্টারের প্রয়োজন হবে ও তাদের ১ কপি করে জাতীয় পরিচয় পএের ফটোকপি ও সদ্য তোলা পার্সপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে। 

এছাড়া আর কোন নথি পএ প্রয়োজন হলে পপি এনজিও এর দায়িত্বরত মাঠকর্মী বা শাখার অফিসার আপনাকে বিস্তারিত তথ্য জানাবেন। 

পপি এনজিও লোনের বৈশিষ্ট্য

পপি এনজিও লোনের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। যা পপি এনজিও লোনটিকে করে তুলেছে সেরা। এসকল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে: 

  • পপি এনজিও থেকে নূন্যতম ৫ হাার টাকা থেকে চাহিদা অনুযায়ী অর্থ লোন নেওয়া যায়। 
  • পপি এনজিও এর সুদের অন্যান্য এনজিও এর সাথে প্রতিযোগিতা মূলক। 
  • সাধারণত ঋণ পরিশোধ করার জন্য নূন্যতম ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ২ বছর সময় পেয়ে থাকেন গ্রাহকেরা। 
  • লুকানো কোন  চার্জ নেই। 

পপি এনজিও লোন এর সুবিধা ও অসুবিধা

প্রতিটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। এক্ষেত্রে পপি এনজিও এর ব্যতিক্রম নয়। নিন্মে পপি এনজিও এর লোনের সুবিধা ছক আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে:

সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধা
  • জামানতবিহীন ঋণ: অধিকাংশ ঋণগ্রহীতাকে কোনো জামানত দিতে হয় না।
  • দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ: অন্যান্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় দ্রুততম সময়ে ঋণ অনুমোদন করা হয়।
  • নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা: নারীরা সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারেন।
  • ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী: যাদের প্রচলিত ব্যাংক ঋণ পাওয়ার সুযোগ কম, তারা এই ঋণ নিতে পারেন।
অসুবিধা
  • সুদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি: অন্যান্য ব্যাংক ঋণের তুলনায় এনজিও ঋণের সুদের হার বেশি হতে পারে।
  • গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ: কিছু ক্ষেত্রে সঞ্চয় গ্রুপে যোগদান করা বাধ্যতামূলক।
  • কিস্তির বাধ্যবাধকতা: নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করতে হয়, যা কিছু ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

পপি এনজিও যোগাযোগের তথ্য

পপি এনজিও বাংলাদেশের সর্বমোট ২৬ টি জেলার ১৭৪টি উপজেলায় বর্তমান সময়ে কাজ করছে। এর সাথে তারা নতুন জেলা উপজেলা ও শাখা গুলিতে দ্রুত সম্পর্কিত হওয়ার কাজ করছে। নিম্নে পপি এনজিওর যোগাযোগের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে: 

  • মোবাইল নম্বর:+880248115852 
  • ইমেইল ঠিকানা: info@popibd.org
  • ওয়েবসাইটঃ https://popibd.org

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পপি এনজিও লোন এর গুরুত্ব 

বাংলাদেশের গ্রামীনে অর্থনীতিতে পপি এনজিও বড় একটি ভূমিকা পালন করছে বিশেষ করে এটি মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলছে । পপি এনজিওর প্রধান লক্ষ্য গ্রামীণ পর্যায়ে সকলকে সচেতন করা ও তাদের আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা।

সম্প্রতি আমাদের গ্রামের মিসেস রহিমা বেগম মাত্র ২০ হাজার টাকা পপি এনজিও থেকে লোন গ্রহণ করে মুরগির খামার শুরু করেছিলেন। ৮ মাসের মধ্যে তিনি তার খামার থেকে মূল অর্থসহ ভালো পরিমাণে অর্থ লাভ করেছেন খামার থেকে। এরই সাথে তার হ্যাঁ খামারটি বেশ সম্প্রসারিত হয়েছে। অর্থাৎ আমরা বুঝতে পেরেছি যে পপি এর জন্য মানুষের দারিদ্র কমাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বিশেষ করে এটি গ্রামীন পর্যায়ের মানুষের জন্য একটি আশার আলো হিসেবে কাজ করছে। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী 

শেষ কথা

প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে”পপি এনজিওর লোন পদ্ধতির সম্পর্কিত সকল তথ্য জানার পাশাপাশি সম্পর্কে আমরা আপনাকে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছি । প্রসেনজিতের থেকে লোন গ্রহণ করার জন্য আপনি অবশ্যই আপনার নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করুন এবং আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে এক ধাপ আরো এগিয়ে যান।

অন্যান্য পোস্টগুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *